২ রাজাবলি 5:19-20-27 পবিত্র বাইবেল (SBCL)

2. অরামীয় হানাদারেরা দলে দলে ইস্রায়েল দেশে যেত। একবার তারা একটা ছোট মেয়েকে বন্দী করে নিয়ে এসেছিল। সে নামানের স্ত্রীর দাসী হয়েছিল।

3. একদিন মেয়েটি তার মনিবের স্ত্রীকে বলল, “আমার মনিব যদি কেবল একবার শমরিয়ার নবীর সংগে দেখা করতে পারতেন, তাহলে তিনি তাঁর চর্মরোগ ভাল করে দিতেন।”

4. ইস্রায়েল থেকে আনা সেই মেয়েটি যা বলেছিল তা নামান গিয়ে তাঁর মনিবের কাছে বললেন।

5. উত্তরে অরামের রাজা বললেন, “ঠিক আছে, তুমি যাও। ইস্রায়েলের রাজার কাছে আমি একটা চিঠি দেব।” কাজেই নামান তিনশো নব্বই কেজি রূপা, আটাত্তর কেজি সোনা আর দশ সেট কাপড় নিয়ে বেরিয়ে পড়লেন।

6. যে চিঠিটা তিনি ইস্রায়েলের রাজার কাছে নিয়ে গেলেন তাতে লেখা ছিল, “আমি আমার সেনাপতি নামানকে এই চিঠি দিয়ে আপনার কাছে পাঠালাম যাতে আপনি তাঁকে তাঁর চর্মরোগ থেকে সুস্থ করেন।”

7. ইস্রায়েলের রাজা সেই চিঠি পড়েই তাঁর কাপড় ছিঁড়ে বললেন, “আমি কি ঈশ্বর? আমি কি মেরে ফেলে আবার জীবন দিতে পারি? চর্মরোগ থেকে সুস্থ হওয়ার জন্য কেন এই লোকটি আমার কাছে একজনকে পাঠিয়েছে? দেখ, কিভাবে সে আমার সংগে ঝগড়া বাধাবার চেষ্টা করছে।”

8. ঈশ্বরের লোক ইলীশায় যখন শুনলেন যে, ইস্রায়েলের রাজা কাপড় ছিঁড়েছেন তখন তিনি তাঁকে এই সংবাদ পাঠালেন, “কেন আপনি আপনার কাপড় ছিঁড়েছেন? লোকটিকে আমার কাছে পাঠিয়ে দিন। তাতে সে জানতে পারবে যে, ইস্রায়েলে একজন নবী আছে।”

9. কাজেই নামান তাঁর সব রথ ও ঘোড়া নিয়ে ইলীশায়ের বাড়ীর দরজার কাছে গিয়ে থামলেন।

19-20. ইলীশায় বললেন, “আপনি মনে শান্তি নিয়ে চলে যান।”নামান তাঁর কাছ থেকে কিছু দূরে যাবার পর ঈশ্বরের লোক ইলীশায়ের চাকর গেহসি মনে মনে বলল, “ঐ অরামীয় নামান যা এনেছিলেন তা গ্রহণ না করে আমার মনিব এমনিই তাঁকে ছেড়ে দিয়েছেন। জীবন্ত সদাপ্রভুর দিব্য যে, আমি তাঁর পিছনে পিছনে দৌড়ে গিয়ে তাঁর কাছ থেকে কিছু চেয়ে নেব।”

21. এই বলে গেহসি নামানের পিছনে পিছনে দৌড়ে গেল। তাকে তাঁর দিকে দৌড়ে আসতে দেখে নামান তাঁর সংগে দেখা করবার জন্য রথ থেকে নামলেন। তিনি তাকে জিজ্ঞাসা করলেন, “সব কিছু ঠিক আছে তো?”

22. উত্তরে গেহসি বলল, “সবই ঠিক আছে। তবে আমার মনিব আপনাকে এই কথা বলবার জন্য আমাকে পাঠিয়েছেন যে, ইফ্রয়িমের পাহাড়ী এলাকা থেকে শিষ্য-নবীদের দু’জন যুবক এখনই তাঁর কাছে এসেছেন। তাই আপনি যেন দয়া করে তাদের জন্য ঊনচল্লিশ কেজি রূপা আর দুই সেট পোশাক দেন।”

23. নামান বললেন, “ঊনচল্লিশ কেজি কেন? তুমি আটাত্তর কেজি নাও।” তিনি সেগুলো নেবার জন্য গেহসিকে সাধাসাধি করতে লাগলেন এবং আটাত্তর কেজি রূপা দু’টা থলিতে বেঁধে দিলেন ও দুই সেট কাপড় দিলেন। সেগুলো তিনি তাঁর দুই দাসের হাতে দিলেন আর তারা গেহসির আগে আগে সেগুলো বয়ে নিয়ে যেতে লাগল।

24. দুর্গের পাহাড়ের কাছে এসে গেহসি সেই দাসদের কাছ থেকে সেগুলো নিয়ে ঘরের মধ্যে রাখল। তারপর সে তাদের বিদায় করে দিলে তারা চলে গেল।

25. এর পরে সে ভিতরে গিয়ে তার মনিব ইলীশায়ের সামনে দাঁড়াল। ইলীশায় জিজ্ঞাসা করলেন, “গেহসি, তুমি কোথায় গিয়েছিলে?”গেহসি বলল, “আপনার দাস কোথাও যায় নি।”

26. কিন্তু ইলীশায় তাকে বললেন, “ঐ লোকটি যখন তোমার সংগে দেখা করবার জন্য রথ থেকে নেমেছিল তখন আমার মন কি তোমার সংগে যায় নি? টাকা-পয়সা, কাপড়-চোপড়, জলপাইয়ের বাগান, আংগুর ক্ষেত, গরু-ছাগল-ভেড়া ও দাস-দাসী নেবার এটাই কি সময়?

27. কাজেই নামানের চর্মরোগ তোমার ও তোমার বংশধরদের মধ্যে চিরকাল লেগে থাকবে।” তখন গেহসি ইলীশায়ের সামনে থেকে চলে গেল আর তার গা চর্মরোগে তুষারের মত হয়ে গেল।

২ রাজাবলি 5