2. “তুমি ইস্রায়েলীয়দের বল যেন তারা ঘুরে গিয়ে সমুদ্র ও মিগ্দোলের মাঝামাঝি পী-হহীরোৎ নামে জায়গাটার কাছে তাদের ছাউনি ফেলে। জায়গাটা সমুদ্রের ধারে বাল্-সফোনের সামনের দিকে।
3. এ দেখে ফরৌণ মনে করবে ইস্রায়েলীয়েরা কি করবে তা ঠিক করতে না পেরে দেশের মধ্যে ঘোরাফেরা করতে করতে মরু-এলাকায় আট্কা পড়েছে।
4. আমি ফরৌণের মন কঠিন করব আর সে তাদের পিছনে তাড়া করবে। কিন্তু ফরৌণ ও তার সৈন্যদল হবে আমার গৌরব প্রকাশের উপায়। এতেই মিসরীয়েরা জানতে পারবে যে, আমি সদাপ্রভু।” ইস্রায়েলীয়েরা সদাপ্রভুর কথামতই কাজ করল।
5. মিসরের রাজা ফরৌণকে যখন বলা হল যে, ইস্রায়েলীয়েরা পালিয়ে গেছে তখন তাদের সম্বন্ধে ফরৌণ ও তাঁর কর্মচারীদের মন বদলে গেল। তাঁরা বললেন, “এ আমরা কি করলাম? তাদের বিদায় করে দিয়ে তো আমরা আমাদের সব দাস হারালাম।”
6. এই কথা বলে ফরৌণ তাঁর রথ সাজাবার হুকুম দিয়ে তাঁর সৈন্যদের একত্র করে সংগে নিয়ে গেলেন।
7. তিনি ছ’শো বাছাই করা রথ তো নিলেনই, তা ছাড়া মিসরীয় অন্যান্য সব রথও সংগে নিলেন। এক একটা রথ এক একজন সেনাপতি চালাচ্ছিলেন।
8. সদাপ্রভু মিসরের রাজা ফরৌণের মন কঠিন করে দিয়েছিলেন। ফলে ইস্রায়েলীয়েরা যখন সাহসের সংগে এগিয়ে যাচ্ছিল তখন তিনি তাদের পিছনে তাড়া করে গেলেন।
9. তাঁর সব ঘোড়া, রথ, ঘোড়সওয়ার ও সৈন্যদল নিয়ে মিসরীয়েরা তাদের পিছনে তাড়া করে তাদের কাছাকাছি এসে গেল। ইস্রায়েলীয়েরা এই সময় সমুদ্রের ধারে বাল্-সফোনের সামনের দিকে পী-হহীরোতের কাছে ছিল।
19-20. তখন ঈশ্বরের দূত যিনি ইস্রায়েলীয় দলের আগে আগে যাচ্ছিলেন তিনি ঘুরে তাদের পিছনে চলে গেলেন। মেঘের থামটাও তাদের সামনে থেকে পিছনে সরে গিয়ে ইস্রায়েলীয় ও মিসরীয়দের দলের মাঝামাঝি দাঁড়াল। তাতে মিসরীয়দের দিকটা হয়ে রইল মেঘলা ও অন্ধকারে ঢাকা আর ইস্রায়েলীয়দের দিকটা রাতের বেলায়ও হয়ে রইল আলোময়। এতে সারা রাতের মধ্যে মিসরীয়েরা ইস্রায়েলীয়দের কাছে আসতে পারল না।
21. পরে মোশি সমুদ্রের উপরে তাঁর হাত বাড়িয়ে দিলেন; আর সদাপ্রভু সারা রাত ধরে একটা পূবের বাতাস জোরে বইয়ে সমুদ্রের জল দু’পাশে সরিয়ে দিলেন। তিনি জলকে দু’ভাগ করে সমুদ্রের মধ্য দিয়ে একটা শুকনা পথ তৈরী করলেন।
22. ইস্রায়েলীয়েরা সমুদ্রের মাঝখান দিয়ে শুকনা মাটির পথ ধরে হেঁটে চলল। তাদের ডানে বাঁয়ে সমুদ্রের জল দেয়ালের মত হয়ে দু’পাশে দাঁড়িয়ে রইল।
23. এই ব্যাপার দেখে মিসরীয়েরা পিছন থেকে ইস্রায়েলীয়দের তাড়া করল। ফরৌণের সব ঘোড়া, রথ ও ঘোড়সওয়ার তাদের পিছনে পিছনে সমুদ্রের মধ্যে গিয়ে ঢুকল।
24. ভোর রাতে সদাপ্রভু মেঘ ও আগুনের থামের মধ্য থেকে মিসরীয় সৈন্যদলের দিকে চেয়ে দেখলেন আর তাদের মধ্যে একটা বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি করলেন।
25. এছাড়া তিনি রথের চাকাগুলোও খুলে ফেললেন; তাতে রথ চালাতে তাদের খুব কষ্ট হচ্ছিল। মিসরীয়েরা তখন বলল, “চল, আমরা ইস্রায়েলীয়দের ছেড়ে পালাই, কারণ সদাপ্রভুই ইস্রায়েলীয়দের হয়ে মিসরীয়দের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছেন।”
26. তখন সদাপ্রভু মোশিকে বললেন, “সমুদ্রের উপরে তোমার হাত বাড়িয়ে দাও। তাতে জল আবার ফিরে এসে মিসরীয়দের উপর এবং তাদের রথ ও ঘোড়সওয়ারদের উপর পড়বে।”
27. তখন মোশি তাঁর হাত সমুদ্রের উপরে বাড়িয়ে দিলেন। ভোর বেলায় সমুদ্রের জল নিজের জায়গায় ফিরে আসল। মিসরীয়েরা তখন ডানে-বাঁয়ে ছুটাছুটি করছিল, কিন্তু সদাপ্রভু তাদের সাগরের ঢেউয়ে ভাসিয়ে নিয়ে গেলেন।
28. সমুদ্রের জল ফিরে এসে রথ ও ঘোড়সওয়ারদের, অর্থাৎ ইস্রায়েলীয়দের পিছনে তাড়া করে আসা ফরৌণের গোটা সৈন্যদলটাকে ডুবিয়ে দিল। তাদের একজনও আর বেঁচে রইল না।
29. ইস্রায়েলীয়েরা কিন্তু সমুদ্রের মাঝখান দিয়ে শুকনা পথ ধরে চলে গিয়েছিল। তাদের ডানে-বাঁয়ে জল দেয়ালের মত হয়ে দাঁড়িয়ে ছিল।
30. সদাপ্রভু এইভাবেই সেই দিন মিসরীয়দের হাত থেকে ইস্রায়েলীয়দের উদ্ধার করেছিলেন। ইস্রায়েলীয়েরা মিসরীয়দের মৃতদেহ সমুদ্রের কিনারে পড়ে থাকতে দেখল।