14. তাঁরা যীশুর কাছে এসে বললেন, “গুরু, আমরা জানি আপনি একজন সৎ লোক। লোকে কি মনে করবে না করবে, তাতে আপনার কিছু যায় আসে না, কারণ আপনি কারও মুখ চেয়ে কিছু করেন না। আপনি সত্যভাবে ঈশ্বরের পথের বিষয়ে শিক্ষা দিয়ে থাকেন। এখন আপনি বলুন, মোশির আইন-কানুন অনুসারে রোম-সম্রাটকে কি কর্ দেওয়া উচিত?
15. আমরা তাঁকে কর্ দেব কি দেব না?”যীশু তাঁদের ভণ্ডামি বুঝতে পেরে বললেন, “আপনারা কেন আমাকে পরীক্ষা করছেন? আমাকে একটা দীনার এনে দেখান।”
16. তাঁরা একটা দীনার আনলে পর যীশু তাঁদের জিজ্ঞাসা করলেন, “এর উপরে এই ছবি ও নাম কার?”তাঁরা বললেন, “রোম-সম্রাটের।”
17. যীশু তাঁদের বললেন, “যা সম্রাটের তা সম্রাটকে দিন, আর যা ঈশ্বরের তা ঈশ্বরকে দিন।” যীশুর এই কথায় তাঁরা আশ্চর্য হয়ে গেলেন।
18. কয়েকজন সদ্দূকী যীশুর কাছে আসলেন। সদ্দূকীদের মতে মৃতদের জীবিত হয়ে ওঠা বলে কিছু নেই। এইজন্য তাঁরা যীশুকে জিজ্ঞাসা করলেন,
19. “গুরু, মোশি আমাদের জন্য এই কথা লিখে গেছেন, ‘যদি কোন লোকের ভাই সন্তানহীন অবস্থায় স্ত্রী রেখে মারা যায় তবে সেই লোক তার ভাইয়ের স্ত্রীকে বিয়ে করবে এবং ভাইয়ের হয়ে তার বংশ রক্ষা করবে।’
20. বেশ ভাল, তারা সাত ভাই ছিল। প্রথমজন বিয়ে করে সন্তানহীন অবস্থায় মারা গেল।
21. তখন দ্বিতীয়জন ভাইয়ের বিধবা স্ত্রীকে বিয়ে করল, কিন্তু সেও সন্তানহীন অবস্থায় মারা গেল। তৃতীয়জনের অবস্থাও তা-ই হল।
22. এইভাবে সাতজনের কারও ছেলেমেয়ে হল না। শেষে সেই স্ত্রীলোকটিও মারা গেল।
23. তাহলে মৃতেরা যখন জীবিত হয়ে উঠবে তখন সে কার স্ত্রী হবে? কারণ সাতজনের প্রত্যেকেই তো তাকে বিয়ে করেছিল।”
24. উত্তরে যীশু বললেন, “আপনারা ভুল করছেন, কারণ আপনারা শাস্ত্রও জানেন না এবং ঈশ্বরের শক্তির বিষয়েও জানেন না।
25. মৃতেরা যখন জীবিত হয়ে উঠবে তখন তারা বিয়েও করবে না এবং তাদের বিয়ে দেওয়াও হবে না; তারা তখন স্বর্গদূতদের মত হবে।
26. মৃতদের জীবিত হয়ে উঠবার বিষয়ে মোশির বইয়ে লেখা জ্বলন্ত ঝোপের কথা কি আপনারা পড়েন নি যে, ঈশ্বর মোশিকে বললেন, ‘আমি অব্রাহামের ঈশ্বর,
27. ইস্হাকের ঈশ্বর ও যাকোবের ঈশ্বর’? ঈশ্বর তো মৃতদের ঈশ্বর নন, তিনি জীবিতদেরই ঈশ্বর। আপনারা খুব ভুল করছেন।”
28. একজন ধর্ম-শিক্ষক সেখানে এসে তাঁদের তর্কাতর্কি শুনলেন। যীশু যে তাঁদের উপযুক্ত জবাব দিয়েছেন তা লক্ষ্য করে তিনি তাঁকে জিজ্ঞাসা করলেন, “মোশির দেওয়া আদেশের মধ্যে সবচেয়ে দরকারী আদেশ কোন্টা?”
29. উত্তরে যীশু বললেন, “সবচেয়ে দরকারী আদেশ হল, ‘ইস্রায়েলীয়েরা, শোন, আমাদের প্রভু ঈশ্বর এক।
30. তোমরা প্রত্যেকে তোমাদের সমস্ত অন্তর, সমস্ত প্রাণ, সমস্ত মন এবং সমস্ত শক্তি দিয়ে তোমাদের প্রভু ঈশ্বরকে ভালবাসবে।’
31. তার পরের দরকারী আদেশ হল এই, ‘তোমার প্রতিবেশীকে নিজের মত ভালবাসবে।’ এই দু’টা আদেশের চেয়ে বড় আদেশ আর কিছুই নেই।”
32. তখন সেই ধর্ম-শিক্ষক বললেন, “গুরু, বেশ ভাল কথা। আপনি সত্যি কথাই বলেছেন যে, ঈশ্বর এক এবং তিনি ছাড়া আর কোন ঈশ্বর নেই।
33. আর সমস্ত অন্তর, সমস্ত বুদ্ধি ও সমস্ত শক্তি দিয়ে তাঁকে ভালবাসা এবং প্রতিবেশীকে নিজের মত ভালবাসা পশু ও অন্য সব উৎসর্গের চেয়ে অনেক বেশী দরকারী।”
34. যীশু যখন দেখলেন সেই ধর্ম-শিক্ষকটি বেশ বুদ্ধিমানের মত উত্তর দিয়েছেন তখন তিনি তাঁকে বললেন, “ঈশ্বরের রাজ্য থেকে আপনি বেশী দূরে নন।” সেই সময় থেকে যীশুকে আর কোন প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করতে কারও সাহস হল না।