22. হে বাদশাহ্, সেই গাছ আপনি; আপনি বৃদ্ধি পেয়েছেন, বলবান হয়ে উঠেছেন, আপনার মহিমা বৃদ্ধি পেয়েছে, আসমান পর্যন্ত পৌঁছেছে এবং আপনার কর্তৃত্ব দুনিয়ার প্রান্ত পর্যন্ত ব্যাপৃত হয়েছে।
23. আর বাদশাহ্ দেখেছেন, এক জন প্রহরী, এক জন পবিত্র ব্যক্তি, বেহেশত থেকে নেমে আসছেন, আর বলছেন, ‘গাছটা কেটে ফেল ও বিনষ্ট কর, কিন্তু ভূমিতে এর মূলের কাণ্ডকে লোহা ও ব্রোঞ্জের শিকলে বেঁধে ক্ষেতের কোমল ঘাসের মধ্যে রাখ; তা আসমানের শিশিরে ভিজুক, মাঠের পশুদের সঙ্গে তার অংশ হোক, যে পর্যন্ত না তার উপরে সাত কাল ঘোরে।’
24. হে বাদশাহ্, এর তাৎপর্য এই; আর আমার মালিক বাদশাহ্র উপরে যা এসেছে, তা সর্বশক্তিমানেরই নিরূপণ।
25. আপনি মানব-সমাজ থেকে দূরীকৃত হবেন, মাঠের পশুদের সঙ্গে আপনার বসতি হবে, বলদের মত আপনাকে ঘাস খেতে দেওয়া হবে, আপনি আসমানের শিশিরে ভিজবেন এবং এভাবে সাত বছর চলে যাবে; যে পর্যন্ত না আপনি জানবেন যে, মানুষের রাজ্যে সর্বশক্তিমান আল্লাহ্ কর্তৃত্ব করেন ও যাকে তা দিতে ইচ্ছা করেন, তাকে তা দেন।
26. আর গাছটির মূলের কাণ্ড রাখার হুকুম দেওয়া হয়েছিল; সুতরাং আপনি যখন জানতে পাবেন যে, বেহেশতই কর্তৃত্ব করে, তখন আপনার হাতে আপনার রাজত্ব ফিরিয়ে আনা হবে।
27. অতএব, হে বাদশাহ্, আপনি আমার পরামর্শ গ্রাহ্য করুন; আপনি ধার্মিকতা দ্বারা আপনার গুনাহ্গুলো ও দুঃখীদের প্রতি করুণা দেখিয়ে আপনার অপরাধগুলো মুছে ফেলুন; হয় তো আপনার শান্তিকাল বৃদ্ধি পাবে।
28. এই সমস্তই বাদশাহ্ বখতে-নাসারের উপর ঘটলো।
29. বারো মাসের শেষে তিনি ব্যাবিলনের রাজপ্রাসাদের উপরে বেড়াচ্ছিলেন।
30. বাদশাহ্ এই কথা বললেন, এ কি সেই মহতী ব্যাবিলন নয়, যা আমি আমার মহাশক্তির দ্বারা ও আমার প্রতাপের মহিমার জন্য রাজধানী করার জন্য নির্মাণ করেছি?
31. বাদশাহ্র মুখ থেকে এই কথা বের হতে না হতেই আকাশ থেকে এই বাণী হল, হে বাদশাহ্ বখতে-নাসার! তোমাকে বলা হচ্ছে, তোমার রাজত্ব তোমা থেকে গেল।
32. আর তুমি মানব-সমাজ থেকে দূরীকৃত হবে, মাঠের পশুদের সঙ্গে তোমার বসতি হবে, বলদের মত তোমাকে ঘাস খাওয়ানো যাবে ও তোমার উপরে সাত কাল ঘুরবে; যে পর্যন্ত না তুমি জানবে যে, মানুষের রাজ্যে সর্বশক্তিমান আল্লাহ্ কর্তৃত্ব করেন ও যাকে তা দিতে ইচ্ছা করেন, তাকে তা দেন।
33. সেই দণ্ডে বখতে-নাসারের সম্বন্ধে সেই কালাম সিদ্ধ হল; তিনি মানব সমাজ থেকে দূরীকৃত হলেন, বলদের মত ঘাস খেতে লাগলেন, তাঁর শরীর আসমানের শিশিরে ভিজল, ক্রমে তাঁর চুল ঈগল পাখির পালকের মত ও তাঁর নখ পাখির নখরের মত হয়ে উঠলো।
34. আর সেই সময়ের শেষে আমি বখতে-নাসার বেহেশতের দিকে চোখ তুললাম ও আমার বুদ্ধি আমাতে ফিরে আসল; তাতে আমি সর্বশক্তিমানের গৌরব করলাম এবং অনন্তজীবী আল্লাহ্র প্রশংসা ও সম্মান করলাম; কারণ তাঁর কর্তৃত্ব অনন্তকালীন কর্তৃত্ব ও তাঁর রাজ্য পুরুষানুক্রমে স্থায়ী;
35. আর দুনিয়া নিবাসীরা সকলে অবস্তুবৎ গণ্য; তিনি বেহেশতী বাহিনী ও দুনিয়া নিবাসীদের মধ্যে তাঁর ইচ্ছানুসারে কাজ করেন; এবং এমন কেউ নেই যে, তাঁর হাত থামিয়ে দেবে, কিংবা তাঁকে বলবে, তুমি কি করছো?
36. সেই সময়ে আমার বুদ্ধি আমাতে ফিরে আসল এবং আমার রাজ্যের গৌরবার্থে আমার প্রতাপ ও তেজ আমাতে ফিরে আসল; আর আমার মন্ত্রীরা ও আমার পদস্থ লোকেরা আমার খোঁজ করলো এবং আমি আমার রাজ্যে পুনঃস্থাপিত হলাম ও আমার মহিমা অতিশয় বৃদ্ধি পেল।