11. এর পর ইউসুফের প্রতি তাঁর ভাইদের মন হিংসায় ভরে উঠল, কিন্তু তাঁর পিতা কথাগুলো মনে গেঁথে রাখলেন, কাউকে বললেন না।
12. পরে ইউসুফের ভাইয়েরা তাদের পিতার ছাগল ও ভেড়া চরাবার জন্য শিখিমে গেল।
13. তখন একদিন ইসরাইল ইউসুফকে বললেন, “তোমার ভাইয়েরা শিখিমে ছাগল ও ভেড়ার পাল চরাচ্ছে। আমি চাই যেন তুমি তাদের কাছে যাও।”ইউসুফ বললেন, “আচ্ছা, আমি যাব।”
14-15. ইসরাইল তাঁকে আরও বললেন, “তোমার ভাইয়েরা আর ছাগল-ভেড়াগুলো কি অবস্থায় আছে তুমি গিয়ে সেই খবর নিয়ে এস।” এই বলে তিনি ইউসুফকে হেবরন উপত্যকা থেকে পাঠালেন।ইউসুফ যখন শিখিমে গিয়ে উপস্থিত হলেন তখন একজন লোক তাঁকে মাঠের মধ্যে ঘোরাফেরা করতে দেখে জিজ্ঞাসা করল, “তুমি কিসের তালাশ করছ?”
16. ইউসুফ বললেন, “আমি আমার ভাইদের তালাশ করছি। আপনি কি জানেন তাঁরা কোথায় ছাগল ও ভেড়ার পাল চরাচ্ছেন?”
17. লোকটি বলল, “তারা এখান থেকে চলে গেছে। আমি তাদের বলতে শুনেছিলাম, ‘চল, আমরা দোথনে যাই।’ ” তখন ইউসুফ তাঁর ভাইদের তালাশে দোথনে গিয়ে তাদের দেখা পেলেন।
18. ভাইয়েরা দূর থেকে ইউসুফকে দেখতে পেল এবং তাদের কাছে গিয়ে পৌঁছাবার আগেই তারা তাঁকে হত্যা করবার ষড়যন্ত্র করল।
19. তারা একে অন্যকে বলল, “ঐ দেখ, স্বপ্নদর্শক আসছে।
20. চল, এখনই আমরা ওকে শেষ করে একটা গর্তের মধ্যে ফেলে দিই। পরে আমরা বলব, কোন বুনো জানোয়ার তাকে খেয়ে ফেলেছে, আর তার পরে আমরা দেখব ওর স্বপ্নের দশাটা কি হয়।”
21. কিন্তু রূবেণ এই কথা শুনে তাদের হাত থেকে তাঁকে উদ্ধার করবার চেষ্টায় বলল, “ওকে প্রাণে মেরো না।”
22. সে তাদের পরামর্শ দিয়ে বলল, “খুন-খারাবি করতে যেয়ো না। ওর গায়ে হাত না তুলে বরং ওকে এই মরুভূমির এই গর্তটার মধ্যে ফেলে দাও।” পরে ইউসুফকে তাদের হাত থেকে উদ্ধার করে পিতার হাতে তুলে দেবে মনে করেই সে এই কথাটা বলল।
23. ইউসুফ তাঁর ভাইদের কাছে এসে পৌঁছামাত্র তারা জোর করে তাঁর শরীর থেকে সেই পুরো হাতার লম্বা কোর্তাটা খুলে নিল।
24. তারপর তারা তাঁকে ধরে সেই গর্তের মধ্যে ফেলে দিল। গর্তটায় কোন পানি ছিল না, সেটা খালি ছিল।
25. এর পর ইউসুফের ভাইয়েরা খাওয়া-দাওয়া করতে বসে দেখতে পেল গিলিয়দ থেকে একদল ইসমাইলীয় ব্যবসায়ী আসছে। উটের পিঠে করে তারা খোশবু-মসলা, গুগ্গুলু ও গন্ধরস নিয়ে মিসর দেশে যাচ্ছিল।
26. তখন এহুদা তার ভাইদের বলল, “ধর, ভাইকে হত্যা করে আমরা কথাটা গোপন করলাম। তাতে আমাদের লাভটা কি?
27. ও তো আমাদের নিজের ভাই, আমাদেরই রক্ত-মাংস। তাই ওর গায়ে হাত না দিয়ে বরং এস, আমরা ওকে ইসমাইলীয়দের কাছে বিক্রি করে দিই।” ভাইয়েরা তার কথাটা মেনে নিল।
28. সেই মাদিয়ানীয় ব্যবসায়ীরা কাছে আসতেই ভাইয়েরা ইউসুফকে গর্ত থেকে টেনে তুলল এবং বিশ টুকরা রূপার বদলে ইসমাইলীয়দের কাছে তাঁকে বেঁচে দিল। সেই ব্যবসায়ীরা ইউসুফকে মিসরে নিয়ে গেল।
29-30. পরে রূবেণ সেই গর্তের কাছে গিয়ে ইউসুফকে দেখতে না পেয়ে দুঃখে তার কাপড় ছিঁড়ে ভাইদের কাছে গিয়ে বলল, “ইউসুফ তো ওখানে নেই। আমি এখন কি করি?”
31. তারা তখন একটা ছাগল কেটে তার রক্তে ইউসুফের সেই কোর্তাটা ডুবাল।