2. ইসরাইল জাতির লোকেরা অন্যান্য জাতির সমস্ত লোকদের কাছ থেকে নিজেদের আলাদা করে নিল। তারা দাঁড়িয়ে নিজেদের গুনাহ্ ও তাদের পূর্বপুরুষদের অন্যায় স্বীকার করল।
3. তারপর তারা দাঁড়িয়ে থেকেই দিনের চার ভাগের এক ভাগ সময় তাদের মাবুদ আল্লাহ্র তৌরাত কিতাব থেকে তেলাওয়াত করতে থাকল আর চার ভাগের এক ভাগ সময় গুনাহ্ স্বীকার করে ও তাদের মাবুদ আল্লাহ্র এবাদত করে কাটাল।
4. ইউসা, বানি, কদ্মীয়েল, শবনিয়, বুন্নি, শেরেবিয়, বানি ও কেনানী নামে লেবীয়রা তাঁদের মঞ্চের উপর দাঁড়িয়ে জোরে জোরে তাঁদের মাবুদ আল্লাহ্কে ডাকলেন।
5. পরে লেবীয়দের মধ্য থেকে ইউসা, কদ্মীয়েল, বানি, হশব্নিয়, শেরেবিয়, হোদিয়, শবনিয় ও পথাহিয় বললেন, “আপনারা উঠে আপনাদের মাবুদ আল্লাহ্র প্রশংসা করুন, যিনি অনাদিকাল থেকে আখেরাত পর্যন্ত আছেন।”তারপর তারা এই বলে মুনাজাত করলেন, “হে মাবুদ, তোমার মহিমাপূর্ণ নামের প্রশংসা হোক; আমাদের দেওয়া সমস্ত শুকরিয়া ও প্রশংসার চেয়েও তুমি মহান।
6. কেবল তুমিই মাবুদ। তুমিই আকাশ, মহাকাশ ও তার মধ্যেকার সব কিছু, দুনিয়া ও তার উপরকার সব কিছু এবং সাগর ও তার মধ্যেকার সব কিছু তৈরী করেছ। তুমিই সকলের প্রাণ দিয়েছ এবং বেহেশতের সকলেই তোমার এবাদত করে।
7. “তুমিই মাবুদ আল্লাহ্। তুমি ইব্রামকে বেছে নিয়ে ক্যালডীয়দের দেশ উর শহর থেকে বের করে নিয়ে এসেছিলে আর তাঁর নাম রেখেছিলে ইব্রাহিম।
8. তুমি তাঁর দিল বিশ্বস্ত দেখে কেনানীয়, হিট্টীয়, আমোরীয়, পরিষীয়, যিবূষীয় ও গির্গাশীয়দের দেশ তাঁর বংশকে দেবার জন্য তাঁর জন্য একটা ব্যবস্থা স্থাপন করেছিলে। তুমি ন্যায়বান বলে তোমার ওয়াদা তুমি রক্ষা করেছিলে।
9. “মিসর দেশে আমাদের পূর্বপুরুষদের কষ্টভোগ তুমি দেখেছিলে; লোহিত সাগরের পারে তাদের কান্না তুমি শুনেছিলে।
18-19. এমন কি, তারা নিজেদের জন্য ছাঁচে ফেলে একটা বাছুরের মূর্তি তৈরী করে বলেছিল, ‘ইনিই তোমাদের আল্লাহ্; মিসর দেশ থেকে ইনিই তোমাদের বের করে এনেছেন।’ এইভাবে যখন তারা তোমাকে ভীষণ কুফরী করেছিল তখনও তোমার প্রচুর মমতার জন্য তুমি মরুভূমিতে তাদের ত্যাগ কর নি। দিনের বেলায় তাদের চালিয়ে নেবার জন্য মেঘের থাম এবং রাতে তাদের যাওয়ার পথে আলো দেবার জন্য আগুনের থাম তাদের কাছ থেকে সরে যায় নি।
20. তুমি তাদের শিক্ষা দেবার জন্য তোমার মেহেরবান রূহ্কে দান করেছিলে। তাদের খাওয়ার জন্য তুমি যে মান্না দিয়েছিলে তা বন্ধ করে দাও নি; তুমি তাদের পিপাসা মিটাবার জন্য পানি দিয়েছিলে।
21. মরুভূমিতে চল্লিশ বছর ধরে তুমি তাদের পালন করেছিলে। তাদের কিছুরই অভাব হয় নি; তাদের কাপড়-চোপড়ও পুরানো হয় নি এবং তাদের পা-ও ফোলে নি।
22. “পরে তুমি অনেক রাজ্য ও জাতি তাদের হাতে দিয়েছিলে, এমন কি, তাদের সমস্ত জায়গাও তাদের মধ্যে ভাগ করে দিয়েছিলে। তারা হিষ্বোণের বাদশাহ্ সীহোনের দেশ ও বাশনের বাদশাহ্ উজের দেশ অধিকার করেছিল।
23. আসমানের তারার মত তুমি তাদের অসংখ্য সন্তান দিয়েছিলে এবং তুমি তাদের সেই দেশে নিয়ে গিয়েছিলে যে দেশে ঢুকে তা অধিকার করবার কথা তুমি তাদের পূর্বপুরুষদের বলেছিলে।
24. তাদের সন্তানেরা সেই দেশে গিয়ে তা দখল করে নিয়েছিল। সেই দেশে বাসকারী কেনানীয়দের তুমি তাদের সামনে নত করেছিলে। কেনানীয়দের, তাদের বাদশাহ্দের ও দেশের অন্যান্য জাতিদের তুমি তাদের হাতে তুলে দিয়েছিলে যাতে তারা তাদের উপর যা খুশী তা-ই করতে পারে।
25. তারা দেয়াল-ঘেরা অনেক শহর ও উর্বর জমি অধিকার করেছিল; তারা সব রকম ভাল ভাল জিনিসে ভরা বাড়ী-ঘর ও আগেই খোঁড়া হয়েছে এমন অনেক কূয়া, আংগুর ক্ষেত, জলপাইয়ের বাগান এবং অনেক ফলের গাছ অধিকার করেছিল। তারা খেয়ে তৃপ্ত হয়ে মোটা-সোটা হয়েছিল এবং তোমার দেওয়া প্রচুর মেহেরবানী ভোগ করেছিল।
26. “কিন্তু তবুও তারা অবাধ্য হয়ে তোমার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছিল; তোমার শরীয়ত তারা ত্যাগ করেছিল। তোমার যে নবীরা তাদের সতর্ক করতেন যাতে তারা তোমার দিকে ফিরে আসে সেই নবীদের তারা মেরে ফেলেছিল; তারা তোমাকে ভীষণ কুফরী করেছিল।
27. কাজেই তুমি শত্রুদের হাতে তাদের তুলে দিয়েছিলে আর শত্রুরা তাদের উপর জুলুম করত। তাদের কষ্টের সময় তারা তোমার কাছে ফরিয়াদ জানিয়েছিল আর তুমি বেহেশত থেকে তা শুনেছিলে। তুমি প্রচুর মমতায় তাদের কাছে উদ্ধারকারীদের পাঠিয়ে দিয়েছিলে। তারা শত্রুদের হাত থেকে তাদের উদ্ধার করেছিল।
28. “কিন্তু যেই তারা বিশ্রাম পেত অমনি আবার তারা তোমার চোখে যা খারাপ তা-ই করত। এর পর তুমি শত্রুদের হাতে তাদের ছেড়ে দিয়েছিলে যাতে শত্রুরা তাদের কর্তা হতে পারে। কিন্তু আবার যখন তারা তোমার কাছে কাঁদত তখন বেহেশত থেকে তা শুনে তোমার মমতায় তুমি বারে বারে তাদের উদ্ধার করতে।
29. “তোমার শরীয়তের দিকে ফিরে আসবার জন্য তুমি তাদের সতর্ক করেছিলে কিন্তু তাদের ব্যবহার ছিল অহংকারে পূর্ণ; তারা তোমার সব হুকুম অমান্য করেছিল। তোমার যে সব নির্দেশ পালন করলে মানুষ বাঁচে তার বিরুদ্ধে তারা গুনাহ্ করেছিল। তারা একগুঁয়েমি করে এবং ঘাড় শক্ত করে তোমার কথা শুনতে চায় নি।
30. কিন্তু তবুও অনেক বছর ধরে তুমি তাদের উপর ধৈর্য ধরেছিলে। তোমার নবীদের মধ্য দিয়ে তোমার রূহের দ্বারা তুমি তাদের সতর্ক করেছিলে, কিন্তু তাতে তারা কান দেয় নি। কাজেই বিভিন্ন জাতির হাতে তুমি তাদের তুলে দিয়েছিলে।